প্রকাশিত: ১৬/০৬/২০১৭ ৩:২৫ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৪:২৪ পিএম

বিনা কারণে কিংবা শরীয়তসম্মত কোনো কারণ ছাড়া রোজা ভঙ্গ করলে তার ওপর কাফফারা আদায় করা ওয়াজিব। রোজার কাফফারা আদায় পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হল-

* রমজান মাসের একটি রোজার পরিবর্তে ধারাবাহিকভাবে দু’মাস রোজা রাখতে হবে। চন্দ্রমাসের পহেলা তারিখ থেকে কাফফারার রোজা শুরু করলে দু’মাস রোজা রাখলেই চলবে। যদিও উভয় মাস বা কোনো একমাস ২৯ দিনের হয়। আর যদি পহেলা তারিখ থেকে রোজা শুরু করা না হয়, তাহলে ধারাবাহিকভাবে ৬০টি রাখতে হবে।

* যদি কারো ধারাবাহিক দুই মাস রোজা রাখার সামর্থ্য না থাকে, তাহলে ৬০ জন মিসকিনকে দুই বেলা তৃপ্তি সহকারে খাওয়াতে হবে অথবা এর মূল্য প্রদান করতে হবে। (সহিহ বুখারী ১৯৩৭)।

* অথবা একজন মিসকিনকে ৬০ দিন দুই বেলা তৃপ্তি সহকারে খাওয়ালেও চলবে। (ফাতওয়া হিন্দিয়া ১/৫১৩)।

* লাগাতার দুই মাস রোজা রাখার শক্তি-সামর্থ্য থাকলে রোজাই রাখতে হবে। সেক্ষেত্রে ৬০ জনকে খাওয়ালেও কাফফারা আদায় হবে না।

* দু’মাস রোজা রাখতে গিয়ে কোনো ওজরেও যদি ধারাবাহিকতা ছুটে যায়, তাহলেও নতুন করে রোজা রাখতে হবে। এক্ষেত্রে আগের রোজাগুলো কাফফারা হিসেবে ধরা যাবে না। তবে মহিলাদের হায়েযের কারণে ‍ধারাবাহিকতা ছুটে গেলে ফের শুরু করতে হবে না। তারা পবিত্র হওয়ার পরই আবার রোজা রাখা শুরু করবেন। (কিতাবুল আসল ২/১৫৮-১৬০)।

যেসব কারণে রোজার কাফফারা আদায় করতে হবে

মাহে রমজানে কোনো বিবেকবান, বালেগ ও মুকীম (মুসাফির নয়) রোজা আদায় করার নিয়তে রোজা রাখলো, আর জেনেবুঝে স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করল, তাহলে তার জন্য রোজার কাযা হিসেবে রোজা রাখতে হবে, সেই সঙ্গে রোজার কাফফারাও আদায় করতে হবে। (রদ্দুল মুহতার, ৩য় খণ্ড)।

রোজাদার শরীয়তসম্মত কারণ ছাড়া কোনো কিছুর স্বাদ গ্রহণ করল কিংবা ওষুধ খেলো, এ অবস্থায় রোজার কাযা ও কাফফারা আদায় করতে হবে। (রদ্দুল মুহতার, ৩য় খণ্ড)।

রোজা ভাঙলে কাফফারা অপরিহার্য হওয়ার পূর্বশর্ত হচ্ছে রাত থেকেই রমজানের রোজার নিয়্যত করে নেওয়া। যদি দিনে নিয়্যত করে এবং ভেঙে ফেলা হয় তাহলে কাফফারা অপরিহার্য নয়, শুধু কাযা দিলে হবে। (আল জাওহারাতুন নাইয়্যারাহ, ১ম খণ্ড)।

স্বপ্নদোষ হলে রোজা ভঙ্গ হবে না, এটা জানার পরও রোজাদার যদি আহার করে নেয় তবে কাফফারা অপরিহার্য। (রদ্দুল মুহতার, ৩য় খণ্ড)।

সেহেরির লোকমা মুখে ছিলো এমন সময় সুবহে সাদিক হয়ে গেছে তথা আযান দিয়ে দিলো কিংবা আযান দেয়নি ভুলে খাচ্ছিল হঠাৎ মনে পড়লো আযান তো হয়ে গেছে এমতাবস্থায় যদি খাবার গিলে ফেলে তাহলে কাযার সঙ্গে রোজার কাফফারা দিতে হবে। (ফতোয়া আলমগীরী, ১ম খণ্ড)।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে উত্তম প্রতিদান দিন। আমীন।

মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান (লেখক, আলোচক ও গবেষক)

শায়খুল হাদিস জামিয়া ইসলামীয়া ইমদাদুল উলুম মাদরাসা, সানারপাড়

খতিব বায়তুল মামুর জামে মসজিদ, শারুলিয়া, ডেমরা

পাঠকের মতামত